All About Rabindra Sangeet

রবীন্দ্র সঙ্গীতের সব কিছু

Geetabitan.com (since 2008)

shyama
2nd Scene


Rabindra Sangeet Albums. Sung by the verified singers of this website. 160 talented singers & over 850 songs.

Go to page

Rabindra Sangeet Collections. Sung by the verified singers of this website. Nearly 500 unique Tagore songs.

Go to page

Musical events organized by this website on the occasion of Pachishe Boishakh. In the year 2014 and 2015.

2014 2015

Detail information about Rabindra Sangeet. All the lyrics, notations, background history with detail musical compositions, English translation and many more.

Go to page

Shyama
শ্যামা

2nd Scene / দ্বিতীয় দৃশ্য


শ্যামার সভাগৃহে কয়েকটি সহচরী বসে আছে

নানা কাজে নিযুক্ত

সখীরা ।     হে বিরহী, হায়, চঞ্চল হিয়া তব—
                          নীরবে জাগ একাকী শূন্য মন্দিরে,
                    কোন্‌ সে নিরুদ্দেশ-লাগি আছ জাগিয়া ।
                            স্বপনরূপিণী অলোকসুন্দরী
                            অলক্ষ্য অলকাপুরী-নিবাসিনী,
                    তাহার মুরতি রচিলে বেদনায় হৃদয়মাঝারে ॥

উত্তীয়ের প্রবেশ

সখীরা ।     ফিরে যাও কেন ফিরে ফিরে যাও
                           বাহিয়া বিফল বাসনা ।
                    চিরদিন আছ দূরে
                           অজানার মতো নিভৃত অচেনা পুরে ।
                    কাছে আস তবু আস না,
                           বহিয়া বিফল বাসনা ।
                    পারি না তোমায় বুঝিতে—
                           ভিতরে কারে কি পেয়েছ,
                                  বাহিরে চাহ না খুঁজিতে ।
                    না-বলা তোমার বেদনা যত
                           বিরহপ্রদীপে শিখার মতো,
                                  নয়নে তোমার উঠেছে জ্বলিয়া
                                         নীরব কী সম্‌ভাষণা ॥

উত্তীয় ।     মায়াবনবিহারিণী হরিণী
                          গহনস্বপনসঞ্চারিণী,
                    কেন তারে ধরিবারে করি পণ
                                অকারণ ।
                    থাক্‌ থাক্‌, নিজ-মনে দূরেতে,
                    আমি শুধু বাঁশরির সুরেতে
                    পরশ করিব ওর প্রাণমন
                                অকারণ ॥

সখীরা ।      হতাশ হোয়ো না, হোয়ো না,
                          হোয়ো না, সখা ।
                    নিজেরে ভুলায়ে লোয়ো না, লোয়ো না
                          আঁধার গুহার তলে ॥

উত্তীয় ।      চমকিবে ফাগুনের পবনে,
                    পশিবে আকাশবাণী শ্রবণে,
                    চিত্ত আকুল হবে অনুখন
                                অকারণ ।
                    দূর হতে আমি তারে সাধিব,
                    গোপনে বিরহডোরে বাঁধিব—
                    বাঁধনবিহীন সেই যে বাঁধন
                                অকারণ ॥

সখীরা ।     হবে সখা, হবে তব হবে জয়—
                                নাহি ভয়, নাহি ভয়, নাহি ভয় ।
                    হে প্রেমিকতাপস, নিঃশেষে আত্ম-আহুতি
                                ফলিবে চরম ফলে ॥

প্রস্থান


সখীসহ শ্যামার প্রবেশ

সখী ।      জীবনে পরম লগন কোরো না হেলা,
                                হে গরবিনী ।
                    বৃথাই কাটিবে বেলা, 
                        সাঙ্গ হবে যে খেলা—
                    সুধার হাটে ফুরাবে বিকিকিনি,
                                হে গরবিনী ।
                    মনের মানুষ লুকিয়ে আসে,
                          দাঁড়ায় পাশে,   হায়—
                    হেসে চলে যায় জোয়ারজলে
                                ভাসিয়ে ভেলা,
                    দুর্লভ ধনে দুঃখের পণে লও গো জিনি,
                                হে গরবিনী ।
                    ফাগুন যখন যাবে গো নিয়ে
                                ফুলের ডালা
                    কী দিয়ে তখন গাঁথিবে তোমার
                                বরণমালা ।
                    বাজবে বাঁশি দূরের হাওয়ায়,
                    চোখের জলে শূন্যে চাওয়ায়
                                কাটবে প্রহর—
                    বাজবে বুকে বিদায়পথে চরণ-ফেলা দিনযামিনী,
                                হে গরবিনী ॥

শ্যামা ।      ধরা সে যে দেয় নাই, দেয় নাই,
                    যারে আমি আপনারে সঁপিতে চাই—
                    কোথা সে যে আছে সংগোপনে,
                    প্রতিদিন শত তুচ্ছের আড়ালে আড়ালে ।
                          এসো মম সার্থক স্বপ্ন,
                          করো মোর যৌবন সুন্দর,
                    দক্ষিণ বায়ু আনো পুষ্পবনে ।
                          ঘুচাও বিষাদের কুহেলিকা,
                          নবপ্রাণমন্ত্রের আনো বাণী ।
                    পিপাসিত জীবনের ক্ষুব্ধ আশা
                    আঁধারে আঁধারে খোঁজে ভাষা—
                          শূন্যে পথহারা পবনের ছন্দে,
                          ঝরে-পড়া বকুলের গন্ধে ॥

সখীদের নৃত্যচর্চা, শেষে শ্যামার সজ্জা-সাধন, এমন সময় বজ্রসেন ছুটে এল । পিছনে কোটাল

কোটাল ।     ধর্‌ ধর্‌ ওই চোর, ওই চোর ।

বজ্রসেন ।     নই আমি নই চোর, নই চোর, নই চোর—
                    অন্যায় অপবাদে আমারে ফেলো না ফাঁদে ।

কোটাল ।     ওই বটে, ওই চোর, ওই চোর, ওই চোর ॥

প্রস্থান


বজ্রসেন যে দিকে গেল শ্যামা সে দিকে কিছুক্ষণ তন্ময় হয়ে তাকিয়ে রইল

শ্যামা ।             আহা মরি মরি,
                    মহেন্দ্রনিন্দিতকান্তি উন্নতদর্শন
                          কারে বন্দী করে আনে
                          চোরের মতন কঠিন শৃঙ্খলে ।
                    শীঘ্র যা লো সহচরী, যা লো, যা লো—
                    বল্‌ গে নগরপালে মোর নাম করি,
                          শ্যামা ডাকিতেছে তারে ।
                          বন্দী সাথে লয়ে একবার
                    আসে যেন আমার আলয়ে দয়া করি ॥

শ্যামা ও সখীদের প্রস্থান


সখী ।      সুন্দরের বন্ধন নিষ্ঠুরের হাতে
                                ঘুচাবে কে— কে !
                    নিঃসহায়ের অশ্রুবারি পীড়িতের চক্ষে
                                মুছাবে কে— কে !
                    আর্তের ক্রন্দনে হেরো ব্যথিত বসুন্ধরা,
                    অন্যায়ের আক্রমণে বিষবাণে জর্জরা—
                    প্রবলের উৎপীড়নে কে বাঁচাব দুর্বলেরে,
                    অপমানিতেরে কার দয়া বক্ষে লবে ডেকে ॥

সহচরীর প্রস্থান


বজ্রসেন ও কোটাল-সহ শ্যামার পুনঃপ্রবেশ

শ্যামা ।      তোমাদের এ কী ভ্রান্তি—
                    কে ওই পুরুষ দেবকান্তি,
                                প্রহরী, মরি মরি ।
                    এমন করে কি ওকে বাঁধে ।
                    দেখে যে আমার প্রাণ কাঁদে ।
                                বন্দী করেছ কোন্‌ দোষে ॥

কোটাল ।                 চুরি হয়ে গেছে রাজকোষে—
                    চোর চাই যে করেই হোক, চোর চাই ।
                    হোক-না সে যে-কোনো লোক, চোর চাই ।
                    নহিলে মোদের যাবে মান !

শ্যামা ।       নির্দোষী বিদেশীর রাখো প্রাণ,
                    দুই দিন মাগিনু সময় ।

কোটাল ।     রাখিব তোমার অনুনয়;
                          দুই দিন কারাগারে রবে,
                          তার পর যা হয় তা হবে ।

বজ্রসেন ।     এ কী খেলা হে সুন্দরী,
                         কিসের এ কৌতুক ।
                          দাও অপমান-দুখ—
                    মোরে নিয়ে কেন, কেন এ কৌতুক ।

শ্যামা ।       নহে নহে, এ নহে কৌতুক ।
                          মোর অঙ্গের স্বর্ণ-অলংকার
                          সঁপি দিয়া শৃঙ্খল তোমার
                          নিতে পারি নিজ দেহে ।
                    তব অপমানে মোর
                    অন্তরাত্মা আজি অপমানে মানে ॥

বজ্রসেনকে নিয়ে প্রহরীর প্রস্থান


সঙ্গে শ্যামা কিছু দূরে গিয়ে ফিরে এসে

শ্যামা ।        রাজার প্রহরী ওরা অন্যায় অপবাদে
               নিরীহের প্রাণ বধিবে ব'লে কারাগারে বাঁধে ।
                    ওগো শোনো, ওগো শোনো, ওগো শোনো,
                          আছ কি বীর কোনো,
                    দেবে কি ওরে জড়িয়ে মরিতে
                          অবিচারের ফাঁদে
                                অন্যায় অপবাদে ॥

উত্তীয়ের প্রবেশ

উত্তীয় ।      ন্যায় অন্যায় জানি নে, জানি নে, জানি নে,
                          শুধু তোমারে জানি, তোমারে জানি,
                                ওগো সুন্দরী ।
                    চাও কি প্রেমের চরম মূল্য— দেব আনি,
                          দেব আনি ওগো সুন্দরী ।
                    প্রিয় যে তোমার, বাঁচাবে যারে,
                          নেবে মোর প্রাণঋণ—
                    তাহারি সঙ্গে তোমারি বক্ষে
                          বাঁধা রব চিরদিন
                                মরণডোরে ।
                    কেমনে ছাড়িবে মোরে, ছাড়িবে মোরে,
                          ওগো সুন্দরী ॥

শ্যামা ।       এতদিন তুমি সখা, চাহ নি কিছু;
                          নীরবে ছিলে করি নয়ন নিচু ।
                    রাজ-অঙ্গুরী মম করিলাম দান,
                          তোমারে দিলাম মোর শেষ সম্মান ।
                    তব বীর-হাতে এই ভূষণের সাথে
                          আমার প্রণাম যাক তব পিছু পিছু ।
                    তুমি চাহ নি কিছু সখা, চাহ নি কিছু ॥

উত্তীয় ।          আমার জীবনপাত্র উচ্ছলিয়া মাধুরী করেছ দান—
                          তুমি জান নাই, তুমি জান নাই,
                    তুমি জান নাই তার মূল্যের পরিমাণ ।
                                রজনীগন্ধা অগোচরে
                    যেমন রজনী স্বপনে ভরে       সৌরভে,
                          তুমি জান নাই, তুমি জান নাই,
                    তুমি জান নাই, মরমে আমার ঢেলেছ তোমার গান ।
                          বিদায় নেবার সময় এবার হল—
                                প্রসন্ন মুখ তোলো,
                                      মুখ তোলো, মুখ তোলো—
                    মধুর মরণে পূর্ণ করিয়া সঁপিয়া যাব প্রাণ      চরণে ।
                যারে জান নাই, যারে জান নাই, যারে জান নাই,
                তার    গোপন ব্যথার নীরব রাত্রি হোক আজি অবসান ॥

শ্যামা হাত ধ'রে উত্তীয়ের মুখের দিকে চেয়ে রইল অল্পক্ষণ পরে হাত ছেড়ে ধীরে ধীরে চলে গেল


সখী ।                    তোমার প্রেমের বীর্যে
                    তোমার প্রবল প্রাণ       সখীরে করিলে দান ।
                          তব মরণের ডোরে
                                বাঁধিলে বাঁধিলে ওরে
                                      অসীম পাপে
                                            অনন্ত শাপে ।
                                তোমার চরম অর্ঘ্য
                    কিনিল সখীর লাগি নারকী প্রেমের স্বর্গ ॥

উত্তীয় ।      প্রহরী, ওগো প্রহরী,
                          লহো লহো লহো মোরে বাঁধি ।
                    বিদেশী নহে সে তব শাসনপাত্র,
                          আমি একা অপরাধী ।

কোটাল ।     তুমিই করেছ তবে চুরি?

উত্তীয় ।            এই দেখো রাজ-অঙ্গুরী—
                    রাজ-আভরণ দেহে করেছি ধারণ আজি,
                          সেই পরিতাপে আমি কাঁদি ।

উত্তীয়কে লইয়া প্রহরীর প্রস্থান


সখী ।     বুক যে ফেটে যায়, হায় হায় রে ।
                    তোর তরুণ জীবন দিলি নিষ্কারণে    
                          মৃত্যুপিপাসিনীর পায় রে ।
                                            ওরে সখা,
                    মধুর দুর্লভ যৌবনধন ব্যর্থ করিলি
                                            কেন অকালে
                    পুষ্পবিহীন গীতিহারা মরণমরুর পারে,
                                            ওরে সখা ।

প্রস্থান


কারাগারে উত্তীয় । প্রহরীর প্রবেশ

প্রহরী ।       নাম লহো দেবতার; দেরি তব নাই আর,
                                দেরি তব নাই আর ।
                    ওরে পাষণ্ড, লহো চরম দণ্ড; তোর
                                অন্ত যে নাই আস্পর্ধার ॥

শ্যামার দ্রুত প্রবেশ

শ্যামা ।      থাম্‌ রে, থাম্‌ রে তোরা, ছেড়ে দে, ছেড়ে দে—
                    দোষী ও-যে নয় নয়, মিথ্যা মিথ্যা সবই,
                          আমারি ছলনা ও যে—
                                বেঁধে নিয়ে যা মোরে
                                      রাজার চরণে ॥

প্রহরী ।       চুপ করো, দূরে যাও, দূরে যাও নারী—
                    বাধা দিয়ো না, বাধা দিয়ো না ॥

দুই হাতে মুখ ঢেকে শ্যামার প্রস্থান


প্রহরীর উত্তীয়কে হত্যা

সখী ।             কোন্‌ অপরূপ স্বর্গের আলো
                    দেখা দিল রে প্রলয়রাত্রি ভেদি
                          দুর্দিনদুর্যোগে,
                    মরণমহিমা ভীষণের বাজালো বাঁশি ।
                          অকরুণ নির্মম ভুবনে
                          দেখিনু এ কী সহসা—
                    কোন্‌ আপনা-সমর্পণ, মুখে নির্ভয় হাসি ॥

End of 2nd Scene / দ্বিতীয় দৃশ্যের সমাপ্তি


Dance Dramas are currently available.

Visit the following links for detail information. More will come soon.

Forum

Geetabitan.com Forum.

Visit page

Collection of Tagore songs

By Geetabitan.com listed singers.

Visit page

Geetabitan.com singers list

Singers name, profile, photo and songs.

Visit page

Send us your recordings

To publish your song in this site.

Visit page

Collection of Chorus

By groups and institutions.

Visit page