Correct pronunciation of 'স' in Bengali

'স' বাংলা বর্ণমালায় দ্বাত্রিংশতিতম ব্যঞ্জনবর্ণ এবং প্রথম উষ্মবর্ণ ('শ', 'ষ', 'স' এবং 'হ' উষ্মবর্ণ) । তিনটি পৃথক 'শ' থাকলেও বাংলায় সংস্কৃতের মতো উচ্চারণস্থান নির্দিষ্ট নয় । সেই কারণে তাদের স্থানবাচক বিশেষণ যোগ করে তালব্য-শ, মূর্দ্ধন্য-ষ ও দন্ত্য-স বলার রীতি আছে ।

প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই 'শ' এই উচ্চারণই স্বীকৃত । কেবলমাত্র কিছু যুক্তবর্ণের ক্ষেত্রে 'স' –এর উচ্চারণ শোনা যায় । 'ত' -বর্গীয় বর্ণ (ত, থ, দ, ধ এবং ন), 'র' –এর সঙ্গে সন্ধিতে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে 'প' ও  'ফ' –এর সঙ্গে সন্ধিতে 'দন্ত্য-স' –এর বিশেষ উচ্চারণ শোনা যায় ।

শব্দের আদিতে উপসর্গরূপে 'স' 'স্ব' বা 'সৎ' –এর ব্যবহার আছে । সে ক্ষেত্রে তার উচ্চারণ বিবৃত এবং মূল শব্দ স্বাধীন ভাবে উচ্চারিত হতে শোনা যায় ।

যেমন – সকর্মক (শকর্‌মক্‌), সচিত্র (শচিত্র), সজীব (শজীব্‌), সঠিক (শঠিক্‌), সতীর্থ (শতীর্‌থো), সমূল (শমূল্‌), সদুপদেশ (শদুপোদেশ্‌), সদুত্তর (শদুত্‌তোর)

স্বরসন্ধি –

স্‌ + অ = স, যেমন – সম (শমো), সতী (শোতি)

স্‌ + আ = সা, যেমন – সহসা (শহোশা), সাহস (শাহোশ্‌)

স্‌ + ই = সি, যেমন – বসি (বোশি)

স্‌ + ঈ = সী, যেমন – সীমা (শিমা)

স্‌ + উ = সু, যেমন – বসু (বোশু)

স্‌ + ঊ = সূ, যেমন – সূচক (শুচক্‌)

স্‌ + ঋ = সৃ (স্‌রি), যেমন – সৃষ্টি (স্‌রিশ্‌টি), সৃজন (স্‌রিজোন্‌)

স্‌ + এ = সে, যেমন – সে (শে), বসে (বশে)

স্‌ + ঐ = সৈ, যেমন – সৈন্য (সোইন্‌নো), সৈন্ধব (শোইন্‌ধব্‌)

স্‌ + ও = সো, যেমন – সোজা (শোজা), এসো (এশো)

স্‌ + ঔ = সৌ, যেমন – সৌন্দর্য (শোউন্‌দোর্‌জো)

'স' –এর যুক্তবর্ণ –

১. স + ক = স্ক (শ্‌ক), যেমন – বয়স্ক (বয়োশ্‌কো), মনস্ক (মনোশ্‌কো)

২. স + খ = স্খ (শ্‌খ), যেমন – স্খলিত (শ্‌খোলিতো)

৩. স + ট = স্ট (স্‌ট), এই সন্ধি সাধারণতঃ বিদেশী শব্দে প্রযুক্ত হয় ।

যেমন – স্টিক, স্টিমার

৪. স + ত = স্ত (স্‌ত), যেমন – হস্ত (হস্‌তো), পরাস্ত (পরাস্‌তো)

৫. স + থ = স্থ (স্‌থ), যেমন – স্থান (স্‌থান্‌), মনস্থ (মনোস্‌থো)

৬. স + ন = স্ন (স্‌ন), যেমন – স্নান (স্‌নান্‌)

৭. স + প = স্প (স্‌প), যেমন – স্পর্ধা (স্‌পর্‌ধা), স্পর্শ (স্‌পর্‌শো)

৮. প + স = প্স (প্‌স), যেমন – ঈপ্সা (ইপ্‌শা)

৯. স + ফ = স্ফ (স্‌ফ), যেমন – স্ফটিক (স্‌ফোটিক্‌), স্ফুর্তি (স্‌ফুর্‌তি)

১০. স + ম = স্ম (শঁ), ম এখানে অনুচ্চারিত দ্বিত্ব সানুনাসিক, যেমন – স্মরণ (শঁরোন্‌)

১১. স + ব = স্ব, এই সন্ধি শব্দের প্রথমে থাকলে 'ব' উপেক্ষিত হয়, কিন্তু শব্দমধ্যে বা অন্তে থাকলে দ্বিত্বে পরিণত হয় । যেমন – স্বভাব (শভাব্‌), সর্বস্ব (সর্‌বোশ্‌শো)

১২. স + য = স্য, শব্দের প্রথমে থাকলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে উপেক্ষিত হয়, আবার ক্ষেত্রবিশেষে 'স্যা' এই উচ্চারণও হয় । শব্দমধ্যে বা অন্তে থাকলে দ্বিত্বের ভাব প্রকাশিত হয় ।

যেমন – স্যন্দন (সন্‌দন্‌), স্যান্তামি (স্যান্‌তামি), সদস্য (শদোশ্‌শো)

১৩. স + র = স্র (স্‌র), যেমন – সহস্র (শহোস্‌রো)

১৪. র + স = র্স (র্‌শ), রানার্স

১৫. স + ল = স্ল (স্‌ল), যেমন – স্লো

এছাড়াও কয়েকটি যুক্তবর্ণ আছে যার ব্যবহার বিদেশী শব্দে সীমিত ।

১৬. ক + স = ক্স (ক্‌স), যেমন – বাক্স (বাক্‌সো), ট্যাক্স (ট্যাক্‌স্‌)

১৭. ন + স = ন্স, যেমন – চান্স (চান্‌স্‌), রোমান্স (রোমান্‌স্‌)